নিজস্ব প্রতিনিধি:
ফেইক ফেইসবুক আইডি খুলে বিভিন্ন ধরনের অপ্রীতিকর ও আপত্তিকর পোস্ট করা এবং ভিকটিমের মূল আইডিতে বিভিন্ন ধরণের অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ মেসেজ প্রদান করে ব্ল্যাকমেইলিং করা হচ্ছে ভিকটিমের এমন অভিযোগ পাওয়ার পর দুইদিনের মধ্যে অপরাধীকে শনাক্ত করে তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ।
অভিযুক্ত আসামির নাম উদয়ন ত্রিপুরা (২৭)। সে খাগড়াছড়ি সদরের অমৃত পাড়ার রঞ্জিত ত্রিপুরার ছেলে। আসামি জেলা সদরের একটি বেসরকারি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ভিকটিমও একটি বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা বলে জানায় পুলিশ।
সোমবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুর ১২টায় খাগড়াছড়ি সদর থানায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশ সুপার মুক্তাধর পিপিএম,বার।
প্রেস ব্রিফিংয়ে খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মুক্তাধর বলেন, ‘সম্প্রতি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন ইস্যুতে সাইবার বুলিং এর ঘটনা অহরহ ঘটছে। এতে করে সামাজিক অবক্ষয়ও দেখা দিয়েছে। গত দুইদিন আগে সাইবার অপরাধের শিকার হয়ে খাগড়াছড়ি জেলার একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক স্কুল শিক্ষিকা খাগড়াছড়ি সদর থানায় এসে লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করেন। কেউ একজন ফেইক ফেইসবুক আইডি খুলে ভিকটিমকে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের অপ্রীতিকর ও আপত্তিকর পোস্ট করার পাশাপাশি তার মোবাইলে বিভিন্ন ধরণের অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ মেসেজ প্রদান করে ব্ল্যাকমেইলিং করার চেষ্টা করছেন। এতে করে ভিকটিম নানাভাবে মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন।

এ অভিযোগ আমাদের নজরে আসলে আমাদের নিজস্ব সাইবার ক্রাইম ইউনিটের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এবং তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দুইদিনের মধ্যে উক্ত ফেইক ফেইসবুক আইডিধারী ও ব্লাকমেইলকারী উদয়ন ত্রিপুরা (২৭) কে শনাক্ত করা হয়। এরপর খাগড়াছড়ি সদর থানার একটি চৌকস টিম অভিযান পরিচালনা করে দূর্গম এলাকা থেকে আসামিকে গ্রেফতার করে তার ব্যবহৃত ডিভাইস গুলিকে জব্দ করা হয়। অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত হওয়ার পর খাগড়াছড়ি সদয় থানায় আসামির বিরুদ্ধে পর্ণোগ্রাফী নিয়ন্ত্রন আইনে একটি নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে।
আসামিকে আদালতে তোলে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হবে। বর্ণিত ভিকটিমের মত আমাদের সমাজের অনেকেই প্রতিনিয়ত বিভিন্ন রকম সাইবার অপরাধের শিকার হচ্ছেন। এই ধরণের অপরাধ গুলি প্রতিরোধে সকলকে সর্বোচ্চ সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান পুলিশ সুপার।
খাগড়াছড়ি জেলায় সাইবার ক্রাইম এবং ভার্চুয়াল জগতে বিভিন্ন অনিয়মের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে জেলা পুলিশে বিশেষ সাইবার ক্রাইম ইউনিট প্রতিষ্ঠা করেছেন খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশ সুপার মুক্তাধর পিপিএম,বার। তিনি খাগড়াছড়ি জেলায় যোগদানের পর এই সাইবার ক্রাইম ইউনিট প্রতিষ্ঠা করেন।
একবিংশ শতাব্দীতে মানুষের কাছে সবচেয়ে সহজলভ্য বস্তুতে পরিণত হয়েছে ইন্টারনেট। প্রযুক্তিকে স্বাচ্ছন্দ্যে নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে কেউ কেউ আবার নিজের অজান্তেই প্রযুক্তির দ্বারাই নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। আর এভাবেই অপরাধের ডিজিটাল মাত্রা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। যার একটি হলো সাইবার অপরাধ। ফলশ্রতিতে এই সাইবার জগতে বিভিন্নভাবে প্রতারনা, বুলিং, আপত্তিকর, অশালীন অনেক ঘটনামুলক অপরাদের শিকার হচ্ছেন বর্তমান সমাজের নাগরিকগণ। এর ব্যাপকতা ও ভয়াবহতা উপলব্ধি করে খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশে বিশেষ সাইবার ক্রাইম ইউনিট প্রতিষ্ঠা করা হয়।